আজ ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাড়ি দখল করতে দফায় দফায় হামলা সতীনের ঘরে

বিশেষ প্রতিনিধি সাভার (ঢাকা)

আশুলিয়ায় জোর করে সতিনের বাড়ি দখল করতে দফায় দফায় হামলা ও মারধর এর অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী নারী বলছে বারবার থানায় অভিযোগ করেও মিলছেনা এর সমাধান।
গত শুক্রবার (০৭) এপ্রিল আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের আমবাগান এলাকায় দুপুর আড়াইটার দিকে, সর্বশেষ বাড়ি দখল নিতে নাদিয়া আক্তার সীমা নামের ভুক্তভোগী ওই নারীর বাড়িতে, তার সতীন ঝুমা জাহান লোকজন নিয়ে হামলা করেছে বলে জানায় ভুক্তভোগী নারী। এর আগে দফায় দফায় তার বাড়িতে হামলা চালালে আশুলিয়া থানায় একাধিক অভিযোগ করেছেন বলে জানায় ভুক্তভোগী নাদিয়া আক্তার।

সীমা ও ঝুমা দুজনই দাবি করেন তারা বরিশাল রেঞ্জের সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মৃতঃ সৌরভ আলী হাওলাদার এর পুত্র রুহুল আমিন রাজীবের স্ত্রী। রুহুল আমিন হাওলাদারের বড় স্ত্রী নাদিয়া আক্তার সীমা ঘরে একটি ১৪ বছরের পুত্র সন্তান আছে।
তাদের স্বামী রুহুল আমিন রাজিব বর্তমানে বরিশালে ছোট স্ত্রী ঝুমাকে নিয়ে বসবাস করছে বলে জানায় পুলিশ।

নাদিয়া আক্তার সীমা বলেন, ‘আমাকে লোকজন নিয়ে এসে কিছুদিন পর পর মারধর করে ঝুমা, আর জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায়। এ বিষয়ে আমি আশুলিয়া থানায় একাধিক অভিযোগ করেছি। সব শেষ শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে দলবল নিয়ে আমার বাসায় এসে হামলা করে। আমাকে ও আমার মা কে বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় আমি থানায় ফোন দিলে এস,আই ফরিদ তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন। এতে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরবর্তীতে ঝুমা দাবী করেন এ বাড়ি তার নামে লিখে দিয়েছে আমার স্বামী, কিন্তু দলিল দেখতে চাইলে দেখাতে পারেনাই ঐ মহিলা। ঘটনাস্থলে পুলিশকে আমার মারধরের বিষয়টি জানাই এবং দেখাই। পূর্বেও আমাকে এরকম মারধর করায় আমি একাধিক অভিযোগ করে রেখেছিলাম আশুলিয়া থানায়, বিষয়টি ফরিদ দারোগা জানতেন। এরপর ওই মহিলাকে পুলিশ নিয়ে গেলে মনে করেছিলাম আমাকে মারধোর ও আগের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে শুনতে পাই কোন এক অজানা কারণে তাকে দূরে নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে’।

‘এ ঘটনায় আমি কষ্ট পেয়ে সরাসরি আশুলিয়া থানায় ওসি সাহেবের সাথে দেখা করে মনের কষ্টে বলি, স্যার এটা কি মাননীয় শেখ হাসিনার দেশ ? এটা কি ডিজিটাল বাংলাদেশ? আমাকে দিন দিন বাসায় এসে মারে আর এস আই ফরিদ স্যার ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীদের এনে ছেড়ে দেয়। তখন ওসি সাহেব আমার মারধরের অবস্থা দেখে ও সব ঘটনা শুনে আমাকে আরো একটি অভিযোগ করতে বলেন। আমি অভিযোগ করে আসলে, সে অভিযোগ এসআই রাজু মন্ডলের কাছে দেয়া হয়’।

‘পরবর্তীতে এস,আই রাজু মন্ডল কে ফোন করলে সে বলে এটা আমার এলাকা না, এটা হচ্ছে ফরিদ সাহেবের এলাকা আপনি ফরিদ সাহেবের সাথে যোগাযোগ করুন।
আর ফরিদ দারোগাকে ফোন করলে সে বলেছে আমি কি করবো ? আপনি থানায় এসে দেখা করেন, এটা রাজু দারোগা দেখবে, আমি কেন এটা দেখব ? এটা রাজুই পারবে তদন্ত করতে’।

আশুলিয়া থানার এস আই ফরিদ বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে নাদিয়া আক্তার সীমার ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। বিষয়টা হচ্ছে ওদের এটা বাড়ি নিয়ে ঝামেলা, আমি যতটুকু জানি প্রথমে বিয়ে করেছিল মনে হয় সীমাকে। শুনেছি পরবর্তীতে ছেড়ে দিয়ে ঝুমাকে বিয়ে করেছে। এটা ওদের ভাষ্য, আমি ভিতরের খবর জানিনা পুরোপুরি। তার বাচ্চার ব্যাপারেও ঐ পক্ষ বলছে এটা রাজীবের বাচ্চা না আর সীমা বলছে তার বাচ্চা, যা আদালতের ব্যাপার। সিমার সাথে তার স্বামীর তেমন একটা যোগাযোগ নাই, এদিকে আসেও না, সে বরিশাল থাকে। পরের বউকে বাড়িটি লিখে দিয়েছে এই দাবিতে উনারা এই বাড়ি নিয়ে প্রত্যেকদিন ঝামেলা করতেছে, আমরা তো পুলিশ হয়ে আর বাড়ি বুঝিয়ে দিতে পারি না। আমরা থাকা অবস্থায় তাদের গায়ে কেউ হাত তোলেনি। পরের বউ আসছিল বাড়ি দখল করতে অথবা ভাড়াটিয়ার ভাড়া নিতে যেটাই হোক, এর ভিতরে তাদের ঝগড়া ও মারামারি হয়েছে এবং সীমারে নাকি ওরা মারছিল শুনছি । পরে আমরা বললাম এখন আপনারা কি করবেন ? তারা বলল মীমাংসা করে দেন, তখন আমরা বললাম মীমাংসা আমরা করতে পারি না, আপনারা থানায় আসেন। পরে সীমা বলেছে যে এলাকায় তারা বসবে, এবং সীমা চাচ্ছে তার বাচ্চার অধিকার ফিরে পাক। এটা যুক্তিসংগত দাবি তার। আর ওই মহিলা আমাদের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি, আর দেখালেও তো আমরা বাড়ি তাদের দখল করে দিতে পারব না, এটা আদালতের ব্যাপার। তাদের বলেছি যদি আপনাদের কাগজ থাকে আপনারা কোর্টে উচ্ছেদ মামলা করতে পারেন। প্রথম স্ত্রীর একাধিক জিডি ও অভিযোগ আছে, এটি দীর্ঘদিন যাবত চলছে। দ্বিতীয় স্ত্রী ও জিডি করেছে আশুলিয়া থানায়। সবশেষ তাদেরকে বলা হয়েছে বাড়ি নিয়ে ঝামেলা থাকলে তারা যেন আইনের মাধ্যমে সমাধান করে এবং ছেলে কার ? সে বিষয়েও যেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়’।

আশুলিয়া থানার এই পুলিশ অফিসার আরো বলেন, ‘এ ঘটনায় দ্বিতীয় স্ত্রী নিরাপদ হীনতায় ভুগলে ট্রিপল নাইনে ফোন করে তখন আমাদের এক সিনিয়র স্যার তাকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়। আগের মহিলা যে বাসায় ছিল সে ওই বাড়িতেই আছে বর্তমানে’।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap